স্বদেশ ডেস্ক: প্রায় ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলায় পুলিশের এএসআইসহ দুজনের দুই বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামিরা হলেন- উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের এএসআই আলমগীর হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) এবং মাছুম বিল্লাহ। আলমগীর যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানাধীন কীর্তিপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে মাসুম বিল্লাহর বাড়ি ঢাকার দোহার থানাধীন উত্তর শিমুলিয়া গ্রামে।
রায় ও দণ্ডের বিষয়টি আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান নিশ্চত করে বলেন, রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ের আরও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে মামলাটিতে গত ৩ জুলাই ও ১৯ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ওই দুই তারিখ রায় পেছানো হয়।
গত ৫ এপ্রিল নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার খাসিয়াল মধ্যপাড়ার বাসিন্দা মো. ইলিয়াস ছয়জনের বিরুদ্ধে এ ছিনতাইয়ের মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, বাদী লতিফ ইম্পেরিয়াল মার্কেটস্থ এইচএস মানি এক্সচেঞ্জের মালিক। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল বেলা ৩ ঘটিকার দিকে তিনি রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানাধীন রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ ঢাকা মেট্টো-গ-১৯-০৯৭০ নম্বরের সাদা একটি প্রাইভেট কার তার সামনে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে ডিবি পরিচয়ে দিয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। একপর্যায়ে কালো কাপড় দিয়ে তার চোখ বাঁধে।
এর পর তারা তার কাছে থাকা মানি এক্সচেঞ্জের ১৮ হাজার ৮শ’ ইউএস ডলার, যার বর্তমান বাংলাদেশের বাজার মূল্য ১৫ লাখ চার হাজার টাকা তা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় ইলিয়াসের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে আসামিরা তাদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু উপস্থিত জনতা গাড়ি আটকে মাসুম বিল্লাহকে আটক করে। এ সময় অপর চারজন পালিয়ে যায়।
পরে পুলিশ মাসুম বিল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, পালিয়ে যাওয়া আসামি এএসআই আলমগীর হোসেন, জনৈক হাবিব ডলার, রাশেদ ও সুমন বলে জানায়। পুলিশ মাসুম বিল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে এএসআই আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেন। মামলায় মাসুম বিল্লাহ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. নূরে আলম সিদ্দিক আনোয়ার হোসেন এবং মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই বছরের ১৯ জুন ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।